গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খাওয়া যাবে কি? কামরাঙ্গা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

বাংলাদেশের প্রায় সব বিখ্যাত ফল গুলোর মধ্যে কামরাঙ্গায় একটি অন্যতম ফল।  কামরাঙ্গা ফল অনেকটা আকাশের তারা মত দেখতে। কামরাঙ্গায় অনেক ধরনের ভিটামিন ও পুষ্টিকর খনিজ পদার্থ ইত্যাদি থাকে।




অনেকের জানতে চেয়েছে যে গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা ফল খাওয়ার উপকারিতা আছে কিনা? কামরাঙ্গা ফলটি করবা অবস্থায় খাওয়া অনেক উপকারী, এটি বাচ্চা ও বাচ্চার মায়ের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও অনেক ধরনের পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে থাকে। তাই কর্ম অবস্থায় কামরাঙ্গা ফলটি খাওয়া অনেক উপকারী।

সূচিপত্র

 স্টার ফুট বা কামরাঙ্গা কি

কামরাঙ্গা হলো একটি প্যাচ ও কোন যুক্ত হল দেশ সবুজ রঙ্গের ফল একে আমরা কামরাঙ্গ বলে থাকি। কামরাঙ্গা সাধারণত শীত কালীন একটি ফল। কামরাঙ্গার প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে। তাছাড়াও কামরাঙ্গা রয়েছে ভিটামিন, কার্বোহাইডেট, জৈব অ্যাসিড, খনিজ পদার্থ। যা গর্ভকালীন অবস্থায় অনেক উপকারিতা হয়ে থাকে।

গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খাওয়া যাবে কি


গর্ভাবস্থায় অনেক মানুষ প্রশ্ন করে যে, গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খাওয়া যাবে কি? হ্যাঁ বিশেষজ্ঞরা কিছু ক্ষেত্রে পরীক্ষা করে দেখছেন যে গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খাওয়া নিরাপদ। কামরাঙ্গায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ খনিজ পদার্থ, ভিটামিন, ফলিক এসিড ও অন্যান্য পুষ্টিগুণ রয়েছে এর ভিতরে। গর্ভাবস্থায় যদি কামরাঙ্গা খেয়ে থাকে তাহলে বাচ্চা নির্দিষ্ট পরিমাণ মতো ভিটামিন ফলিক এসিড ও আরো বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণ পেয়ে থাকবে।
তাছাড়াও কামরাঙ্গা অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা প্রতিরোধে সহায়তা করে থাকে। কামরাঙ্গায় অক্সিলিক এসিডের পরিমাণ অনেক বেশি, যদি বাচ্চার মায়ের কিডনির সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে এটি খাওয়া প্রয়োজন, তাছাড়া এটি না সেবন করাটাই ভালো হবে।

গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খেলে যে যে উপকারিতা হয়

গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খাওয়াটা অনেক উপকারী। কামরাঙ্গা রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, খনিজ পদার্থ ফলিক এসিড ও অক্সালিক এসিড। বিশেষ করে কামরাঙ্গা রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি এর উপাদান। গর্ভাবস্থায় থাকাকালীন মহিলাদের অনেক ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। বিশেষ করে একটি সমস্যা হলো গর্ভবতী মহিলাদের কোষ্ঠকাঠিন্য ও হজমের সমস্যা দেখা দেয়।



 
এ ফলটি স্বাস্থ্যকর এটি খেলে মহিলাদের হজম, কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া ইত্যাদি সংক্রামক রোগ কমাতে সাহায্য করে থাকে। যাইহোক হজম সংক্রামক সমস্যা হয়ে থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কামরাঙ্গা খাওয়া উচিত, না হলে অসুবিধা দেখা দিতে পারে কারণ অনেক মহিলাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। 

তাছাড়া কামরাঙ্গায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ লবণ ভিটামিন কার্বোহাইড সহ বিভিন্ন ধরনের পদার্থ। এ সকল পদার্থ গর্ভকালীন সময় মায়ের অনেক দরকার হয়ে থাকে। তাছাড়া কামরাঙ্গা খাওয়ার ফলে বাচ্চা ও মায়ের দুজনের ভিটামিন সি এর অভাব দূর হবে তাই বলা যেতেই পারে যে গর্ভাবস্থা কালীন কামরাঙ্গা খাওয়ার অনেক উপকারিতা দিক রয়েছে।

কামরাঙ্গার পাতার উপকারিতা দিকগুলো

কামরাঙ্গা হল বহু পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ একটি ফল। কামরাঙ্গা ফল যেমন উপকারী তেমনি কামরাঙ্গা পাতা দিয়ে অনেক ধরনের উপকারিতা হয়ে থাকে। কামরাঙ্গার পাতা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। কামরাঙ্গা পাতার উপকারী দিকগুলো হলো
  1. আমাদের শরীরের যদি কোন জায়গায় কেটে যায়, তাহলে কামরাঙ্গার পাতার রস আমাদের রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে থাকে।
  2. গর্ভাবস্থায় মহিলা দের অনেক বমি হয়ে থাকে , এ সময় কামরাঙ্গার পাতা অনেক বড় ভূমিকা পালন করে থাকে। তাছাড়া সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রেও যদি বমি হয় তাহলে কামরাঙ্গা পাতার অনেক উপকারিতা দিক রয়েছে। সাধারণত কামরাঙ্গার পাতার গন্ধ নিলে বা একটু মুখে দিলে বমি বন্ধ হয়ে যায়।
  3. সর্দি কাশি নিরাময় কামরাঙ্গার পাতা অনেক কার্যকর হয়ে থাকে।
  4. পেটে ব্যথা সহ সকল ধরনের সমস্যা দূর করনে ভূমিকা রেখে থাকে কামরাঙ্গার পাতার রস।
  5. মানুষের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করণে কামরাঙ্গার পাতার রস ভূমিকা রেখে থাকে।

শিশুর বিকাশে কামরাঙ্গার ভূমিকা

কামরা কে এমন এক ধরনের ফল যা শিশুর সুস্থ বিকাশের সাহায্য করে থাকে। কামরাঙ্গা রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন কার্বোহাইড ও খনিজ পদার্থের মত অনেক ধরনের পদার্থ। গর্ভাবস্থায় একটি মা যদি কামরাঙ্গার সেবন করে থাকে তাহলে তার শিশু সঠিক পরিমাণ পুষ্টি উপাদান পেয়ে থাকবে।

 শিশুর সুস্থ মস্তিষ্ক ও সুষ্ঠ বিকাশের সাহায্য করে থাকে। তাছাড়া রয়েছে কামরাঙ্গায় ভিটামিন সি এর পরিমাণ অনেক বেশি, জামাইয়ের শরীরের ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া ইত্যাদি দূর করার সাহায্য করে থাকে। তখন শিশু এগুলো সংক্রামক রোগ হতে রক্ষা পেয়ে থাকে। 

শিশু এখান থেকে সব ধরনের ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ ক্যালসিয়াম ইত্যাদি পেয়ে থাকে এর ফলে শিশু সুস্থ বিকাশে পৃথিবীতে আসতে পারে। তাই বলায় যেতে পারে যে শিশুর বিকাশে কামরাঙ্গার ভূমিকা অপরিহার্য।

গর্ভাবস্থায় মহিলাদের রক্তচাপ স্থিতিশীলতা রাখতে কামরাঙ্গার ভূমিকা

গর্ভাবস্থায় প্রত্যেকটি মহিলারই রক্তচাপ হয়ে থাকে। গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা সেগুন করলে মহিলাদের রক্তচাপ স্থিতিশীলতা রাখে। গর্ভবতী মহিলাদের অনিয়মিত রক্তচাপ খুবই সাধারণ ঘটনা, কামরাঙ্গায় রয়েছে উচ্চ উচ্চমাত্রার পটাশিয়াম যা মহিলাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে থাকে। তাছাড়া বিভিন্ন বিভিন্ন ধরনের পদার্থ রয়েছে যেমন খনিজ ভিটামিন ইত্যাদি সঠিক পরিমাণ মতো কামরাঙ্গা থেকে গর্ভবতী মহিলারা পেয়ে থাকে এর ফলে রক্তচাপ একটু স্থিতিশীলতা হয়ে থাকে। তাই বলায় যেতে পারে যে গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খেলে মহিলাদের রক্তচাপ স্থিতিশীলতা হয়ে থাকে।

গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গার কিছু ক্ষতিকর দিক

গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খাওয়া যেমন উপকারিতা, তেমনি কিছু কিছু ক্ষেত্রে কামরাঙ্গা খাওয়াটা গর্ভবতী মহিলাদের শরীরের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে থাকে। কামরাঙ্গা রয়েছে ফলিক এসিড সহ আরো উচ্চমাত্রার কিছু এসিড রয়েছে। তাই যাদের কিডনির সমস্যা রয়েছে কামরাঙ্গা ও কামরাঙ্গা রস খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে থাকবে।

 তাছাড়া কামরাঙ্গা অতিরিক্ত সেবনে গর্ভবতী মহিলাদের ডায়রিয়া দেখা দিতে পারে,এর ফলে মহিলাদের শরীরের পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি বের হয়ে যাবে। এ পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি বের হওয়া যাওয়ার ফলে বাচ্চা পানি শূন্যতায় ভুগবে এর ফলে বাচ্চার অসুবিধে দেখা দিবে।

তাছাড়া বাচ্চা গর্ভে থাকাকালীন কামরাঙ্গা খালি পেটে খাওয়া যাবে না এর ফলে গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ কামরাঙ্গা খাওয়া উচিত। কিন্তু যদি আমরা পরিমাণের বাহিরে খেয়ে থাকি তাহলে আমাদের শরীরের জন্য এটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে থাকবে । এ ঝুঁকিপূর্ণতা ফলে বাচ্চা ও বাচ্চার মায়ের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা হয়ে থাকে।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আশা করি আপনি উপরোক্ত সবগুলো তথ্য পাঠের মাধ্যমে আপনার সব প্রয়োজনে তথ্য জানতে পারছেন। গর্ভাবস্থায় থাকা কালীন কামরাঙ্গা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য অনেক উপকারি। এ সময় কামরাঙ্গা থেকে মহিলারা পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ফলিক এসিড , খনিজ পদার্থ সহ বিভিন্ন ধরনের পদার্থ পেয়ে থাকে এই কামরাঙ্গায়। যার ফলে মা ও শিশু পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন, এসিড, ও খনিজ পদার্থ পেয়ে থাকে। 

আবার কিছু কিছু গর্ভবতী মহিলাদের বিভিন্ন সমস্যার জন্য কামরাঙ্গা তাদের ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করা প্রয়োজন। তাছাড়া পরবর্তী সময়কালীন বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আমরা বলতে পারি যে গর্ভাবস্থায় থাকা কালীন কামরাঙ্গার অপকারিতা পরিমাণে চেয়ে উপকারিতার পরিমাণ অনেক বেশি রয়েছে এই ফলটির ভিতরে। তাই এটি পর্যাপ্ত পরিমাণ সেবন করা প্রয়োজন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url