আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কলমি শাকের উপকারিতা দিকগুলো হলো
কলমি শাক হলো এক ধরনের সবজি। গ্রাম বাংলার সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি জনপ্রিয় খাবার হল কলমি শাক। কলমি শাক হলো অনেক পুষ্টিগুণে ভরপুর। দেশের বিভিন্ন ধরনের শাক যেমন পাট শাক, লাল শাক, পুঁইশাক ইত্যাদি এগুলো শাকের ভিড়ে ধীরে ধীরে কলমি শাক হারিয়ে যাচ্ছে। এই শাকটি প্রধানত গ্রাম অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে হয়ে থাকে। তাই জন্য এই শাকটি গ্রামীণ অঞ্চলে বেশি দেখা যায়।
কলমি শাক আমাদের শরীরের জন্য একটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ শাক। এই শাক আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারিতা একটি খাবার শাক। কলমি শাকের প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন রয়েছে তাছাড়া রয়েছে আয়রন আরো অনেক উপাদান রয়েছে এ শাকের। এই শাক আমাদের শরীরে অনেক রোগ দূর করে অনেক সাহায্য করে থাকে। তাই এই শাকটি আমাদের শরীরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি খাবার। এই শাক এ পুষ্টিকর বিভিন্ন ধরনের উৎস রয়েছে, যে কারণে এই শাক কে স্বাস্থ্যকর শাকগুলোর মধ্যে গণ্য করা হয়।
সূচিপত্র
- কেন প্রতিদিন নিয়ম করে খাওয়া দরকার কলমি শাক
- কলমি শাকে কি কি ধরনের ভিটামিন রয়েছে
- গর্ভাবস্থায় কলমি শাক খেলে যে যে উপকারিতা হয়
- দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে কলমি শাকের ভূমিকা
- মানুষের লিভারের জন্য কলমি শাকের ভিতর যে যে উপকারিতা দিক রয়েছে
- কলমি শাকের চাষাবাদ
- কিভাবে খাবেন কলমি শাক
- কলমি শাকের কিছু ক্ষতিকর দিক
কেন প্রতিদিন নিয়ম করে খাওয়া দরকার কলমি শাক
বর্তমান সময়ে কলমি শাক সম্পর্কে জানা নাই বেশি সংখ্যক মানুষেরই। অনেক বড় বড় বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন যে, স্বাস্থ্যের উপকারের জন্য কলমি শাক অনেক বড় ভূমিকা রেখে থাকে। মাছে ভাতে যেমন পরিচিতি আছে বাঙালির, তেমনি সুস্বাস্থ্যর দিক দিয়ে পরিচিত রয়েছে বাঙালির। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিন খাবারের তালিকায় একটু শাক রাখার পরামর্শ দিয়েছেন আমাদের। কলমি শাক থেকে শুরু করে আরও বিশেষ ধরনের ও বিভিন্ন ধরনের শাক। কারণ আমাদের দৈনিন্দন জীবনে সবুজ শাকের প্রয়োজন আছে। তাই কলমি শাক এর ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কলমি শাক আমাদের সুস্বাস্থ্যর জন্য অনেক বড় ভূমিকা রেখে থাকে। কলমি শাকিল আমাদের দৈনন্দিন জীবনে খাওয়া অনেক প্রয়োজন কারণ এটি পরিপূর্ণ পুষ্টি দ্বারা ভরপুর। এই শাকে অনেক ধরনের ভিটামিন রয়েছে। বিশেষ করে ভিটামিন সি এর অবদান অনেক বেশি রয়েছে। তাছাড়া এই শাক নিয়মিত খাইলে অনেক ধরনের নিয়মিত রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
কলমি শাকে কি কি ধরনের ভিটামিন রয়েছে
সহজলভ্য থাকেন নাম হলো কলমি। এই শাক বেশিরভাগ সময় গ্রাম অঞ্চলের দিকে দেখা যায়। এ শার্টটি ভিটামিনের পরিপূর্ণ। কলমি শাক ে বেশিরভাগ উপস্থিত রয়েছে ভিটামিন সি, আয়রন, অন্যান্য কিছু প্রয়োজনীয় উপাদান।
কলমি শাক এ অনেক ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে। প্রতি ১০০ গ্রাম কলমি শাক এ পুষ্টির পরিমাণ: পানি -৮৯৭ গ্রাম, আমিষ-৩৯ গ্রাম, লোহ রয়েছে ০.৬ গ্রাম, ক্যালসিয়াম রয়েছে ০.৭১ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি রয়েছে ৪৯-মিলিগ্রাম, ক্যালোরি রয়েছে-৩০ কিলোক্যালরি।
তাছাড়া এর শাকের ভিতর রয়েছে আরো অন্য ধরনের ভিটামিন ও পুষ্টিকর দ্রব্য। এই শার্ট কি আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। এই শাকের মাধ্যমে দেহের অনেক ধরনের ভিটামিন ও পুষ্টিকর খাদ্য অভাব মেটাতে পারবে।
গর্ভাবস্থায় কলমি শাক খেলে যে যে উপকারিতা হয়
কলমি শাক মেয়েদের গর্ভাবস্থায় পুষ্টি ও ভিটামিনের জন্য অনেক বড় ভূমিকা রেখে থাকে। গর্ব অবস্থায় একটি মায়ের যত্ন নেওয়া আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাকে সঠিক পরিমাণে পুষ্টি উপাদান, ভিটামিন ইত্যাদি দেওয়ার জন্য আমাদের কোন ধরনের ওষুধ বা ইনজেকশনের প্রয়োজন নাই, এর জন্য প্রাকৃতিক ভাবে সেটার অভাব পূরণ করা যায়।
গর্ভাবস্থায় একটি মেয়ের জন্য সবুজ খাবারের অনেক প্রয়োজন এতে করে বাচ্চার সুস্বাস্থ্য ও সুন্দর দেহের অধিকারী হয়ে থাকে। এছাড়া সবুজ পুষ্টি উপাদানের অভাবে বাচ্চা রাতকানা এগুলো রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। তাই একটা বাচ্চার মায়ের পেটে থাকা কালীন সময় মাকে বেশি বেশি পরিমাণ সবুজ খাবার খেতে হয় যাতে বাচ্চার ঠিকমতো পুষ্টি উপাদান ভিটামিন ইত্যাদির অভাব না পায়।
কলমি শাকে এগুলো সবগুলোই রয়েছে ভিটামিন ঠিকমতো পুষ্টি উপাদান ইত্যাদি । এই শাকের মাধ্যমে বাচ্চা রাতকানা রোগের হাত থেকে রক্ষা পাবে, তাছাড়া আরো অন্যান্য রোগের হাত থেকে রক্ষা পাবে বাচ্চা সুন্দর ও পরিপুষ্ট হবে।
দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে কলমি শাকের ভূমিকা
কলমি শাক আমাদের দেহের জন্য অনেক উপকারী একটি শাক। এটির মাধ্যমে দেহের বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন পুষ্টিকর উপাদানের অভাব মিটিয়ে থাকে। অনেকেই আছে ছোট বয়স থেকে চোখের সমস্যা দেখা দিচ্ছে অনেকেরই। বর্তমান সমাজে এই সমস্যাটি অনেক বেশি দেখা যাচ্ছে। এই সমস্যাতে বাঁচতে আমাদের নিয়মিত কলমি শাক খাওয়া অনেক জরুরী। কারণ কলমি শাকে রয়েছে ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি এর পরিমাণ। মানুষের চোখ ভালো রাখতে কার্যকরী উপাদান হলো ভিটামিন। তাই আমাদের প্রকৃতি থেকে এ ভিটামিন গুলো পেতে গেলে বিভিন্ন ধরনের খাবার প্রয়োজন রয়েছে। আর কলমি শাক ভিটামিন ও পুষ্টিকর খাবার দ্বারায় পরিপুষ্ট। তাই যদি আমরা নিয়মিত কলমি শাক খেয়ে থাকি তাহলে ,এটির মাধ্যমে আমাদের শরীরে অনেক ভিটামিন পাবে যার ফলে দৃষ্টিশক্তি বাড়বে। যার মাধ্যমে আমরা চোখে ভালোভাবে দেখতে পাবো। কলমি শাক আমাদের শরীরে ভিটামিনের অভাব মিটিয়ে থাকে।
মানুষের লিভারের জন্য কলমি শাকের ভিতর যে যে উপকারিতা দিক রয়েছে
কলমি শাক শুধু দৃষ্টি শক্তি না এটি আমাদের লিভারের ভালো রাখতেও কাজ করে থাকে।@#@#@ লিভার ভালো রাখতে কলমি শাক বেশ কার্যকরী ভূমিকা রেখে থাকে। এটির জন্ডিসের ক্ষেত্রেও সমানভাবে কাজ করে থাকে। গবেষণা করে দেখা গেছে যে ,কলমি শাকের উপাদান লিভারের ক্ষতিকর পদার্থ বের করে দেয়। এই ক্ষতিকর পথ বের করে দেওয়ার ফলে লিভার সুন্দর ও ভালো থাকে। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত লিভার কে সুস্থ করার ক্ষেত্রেও এটি ভূমিকা রেখে থাকে। কলমি শাকের ভিতরের ভিটামিন ও পুষ্টি উপাদান লিভার ভালো রাখতে অবদান রেখে থাকে। তাছাড়াও এটি ক্ষতিগ্রস্ত লিভার কেউ সুস্থ করতে কার্যকরী হয়ে থাকে। যদি আপনার লিভারের সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে আপনার প্রত্যেক দিনের খাদ্য তালিকায় এই কলমি শাক রাখতে পারেন।
কলমি শাকের চাষাবাদ
কলমি শাক বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলে হয়ে থাকে। তবে রে বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে কলমি শাক বেশি চাষ হয়ে থাকে।
প্রাকৃতিকভাবে এরা পানি বা পানির ধারে ভেজা মাটিতে গাছগুলো জন্ম হয়ে থাকে। আর এই গাছকে বেশি যত্ন করতে হয় না। বাংলাদেশে এটি শাক হিসেবে অনেক জনপ্রিয়। কলমি শাক সাধারণত ভাজি করে খাওয়া হয়। তাছাড়াও এটি ঝোল সহ মাছ দিয়ে রান্না করে খাওয়া হয়ে থাকে। কলমি শাকটি অনেক সুস্বাদু হয়ে থাকে।
কিভাবে খাবেন কলমি শাক
কলমি শাক বা যেকোনো ধরনের শাক সবজির উপকারিতা পেতে হলে সঠিকভাবে রান্না করে খেতে হবে কলমি শাকের ক্ষেত্রেও তাই।
- শাক কাটার আগে পানি দিয়ে সুন্দর করে পরিষ্কার করে নিতে হবে। শাক কাটার পরে পানি দিয়ে পরিষ্কার করা যাবে না।
- যতটা সম্ভব কম তেলের রান্না করে খাওয়ার চেষ্টা করবেন। তাহলে এটি শরীরের জন্য অনেক উপকার হয়ে থাকবে।
- খুব বেশি সময় ধরে কলমি শাক রান্না করতে থাকবেন না। একটু নরম হইলে রান্না বন্ধ করে দিবেন, না হলে এর ভিতর কার সব ভিটামিন নষ্ট হয়ে যাবে। তাহলে এখান থেকে আমরা সঠিক পরিমাণ মতন ভিটামিন পাবনা।
কলমি শাকের কিছু ক্ষতিকর দিক
কলমি শাক আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী শাক এটা যেমন সত্যি, তেমনি কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই শাক আমাদের শরীরের একটু ক্ষতি করে থাকে। যেমন কলমি শাকে অনেক পরিমাণ এলার্জি রয়েছে। যাদের এলার্জির সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য এই শাক খেলে একটু অসুবিধা দেখা যেতে পারে। তাছাড়া বেশিরভাগের জন্য উপকারী হলেও, কলমি শাকে রয়েছে উচ্চ ফাইবার উপাদান। কিছু কিছু ব্যক্তির গ্যাস্ট্রলজির সমস্যা রয়েছে যে তারা এ শাকটি খেলে সমস্যা দেখা দিতে পারে। কলমি শাকসবজি চাষে অনেক ক্ষেত্রে কীটনাশক ব্যবহার করা থাকে ফলে এটি বেশি অংশবিশেষ খেলে শরীরের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। তাছাড়াও কলমি সবজিতে উচ্চমাত্রার নাইটের থাকে যা, আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকারক নাইট্রেট হিসেবে রূপান্তরিত হতে পারে।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আশা করি আপনি কলমি শাক সম্পর্কে অনেক কিছু তথ্য জানতে পারছেন। কলমি শাক আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী একটি শাক। কারণ এই শাক থেকে আমরা অনেক ধরনের ভিটামিন পেয়ে থাকি ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি। তাছাড়া অনেক ধরনের পুষ্টি উপাদান আমরা পেয়ে থাকি এই শাকসবজি থেকে। এককথায় বলা যায় যে কলমি শাক পুষ্টি উপাদান ও ভিটামিন দ্বারা ভরপুর। কিন্তু কিছু কিছু মানুষের ক্ষেত্রে যাদের অনেক ধরনের সমস্যা রয়েছে যেমন গ্যাসট্রলজি, এলার্জি ইত্যাদি তাদের জন্য একটু সমস্যা দেখা দিতে পারে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url